• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১০ই কার্তিক ১৪৩২ রাত ১১:৩৪:১৭ (25-Oct-2025)
  • - ৩৩° সে:

পলাতক প্রধান শিক্ষকের স্থায়ী অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার দোহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেগম আয়শা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সাবেক প্রধান শিক্ষক কুলসুম বেগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে তার স্থায়ী অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে।১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় সচেতন অভিভাবক, সাবেক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীও একাত্মতা প্রকাশ করেন।জানা যায়, সাবেক প্রধান শিক্ষক নিয়োগের সময় বিধি মোতাবেক ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। কিন্তু কুলসুম বেগম ১০ বছর ৩ মাসের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হয়েও ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করে নিয়োগ লাভ করেন। এছাড়াও, তিনি রেজুলেশনে জুনিয়র বেতন গ্রেড থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগকে প্রমোশন দেখান, অথচ সহকারী শিক্ষক হিসেবে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেননি। এর ফলে তিনি প্রধান শিক্ষিকা হলেও বেতন পেতেন সহকারী শিক্ষকের বেতন গ্রেডে।এছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে একক কর্তৃত্ব চালিয়ে আসছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিক্ষাসংক্রান্ত কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তিনি স্বজনপ্রীতি করে নিজের ও শ্বশুরালয়ের ৮/৯ জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন, যারা সরাসরি তাঁর আত্মীয়।নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমাদের স্কুলের টেবিল, বেঞ্চ ও কিছু চেয়ার সাবেক প্রধান শিক্ষক তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে ঢাকার বাসায় নিয়ে গেছেন। সেই কর্মচারীরাও এটি স্বীকার করেছেন। তাহলে এখনো এর বিচার হচ্ছে না কেন?’অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান জানান, ‘তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ ভাষায় কথা বলতেন। দরিদ্র কেউ বেতন কমানোর অনুরোধ করলে তিনি তাদের গৃহকর্মীর কাজ করতে বলতেন। এমন একজন মানুষ কীভাবে শিক্ষক হতে পারেন?’দশম শ্রেণির খাদিজা আক্তার অভিযোগ করেন, ‘আমরা জেনেছি যে, স্কুলের খেলার মাঠের জন্য ডিসি স্যার একলক্ষ টাকা দিলেও মাত্র বারো হাজার টাকার বালু ফেলা হয়। এর সাক্ষী আমাদের শিক্ষকেরাই। আমরা এর বিচার চাই।’স্থানীয় অভিভাবক আবুল কাশেম বলেন, ‘তিনি ছিলেন একাই একশো। তার কথার বাইরে কেউ কথা বলার সুযোগ পেত না। পকেট কমিটি বানিয়ে একাই স্কুল চালাতেন। আমরা বহুবার প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু কিছু হয়নি।”বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সমাজকর্মী নুজহাত তারিন বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন অনিয়ম চলতে পারে না। আমরা শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে গর্বিত। প্রশাসনের উচিত, দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া।’মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল দোহার থানায় গিয়ে অফিসার ইনচার্জ মো. হাসান আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ওসি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শোনেন এবং বলেন, ‘তদন্ত শেষের পথে। খুব দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। সত্য উদঘাটিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’এ বিষয়ে কুলসুম বেগমের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকেও কেউ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

জেলার ইতিহাস


দর্শনীয় স্থান