• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১লা পৌষ ১৪৩২ রাত ১২:৪০:১৯ (16-Dec-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজের সব টিকিট অগ্রিম বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিজয় দিবস ও বছরের শেষ ভাগের সরকারি ছুটি ঘিরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটকের চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এরই মধ্যে ১৫ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন নৌপথে চলাচলকারী জাহাজগুলোর প্রায় সব টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে।সরকার নির্ধারিত দৈনিক সর্বোচ্চ ২ হাজার পর্যটকের সীমা অনুযায়ী, এই সময়ে বিক্রি হওয়া টিকিটের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজারে পৌঁছেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুধু ডিসেম্বর নয় আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্তও প্রায় অর্ধেক টিকিট ইতোমধ্যে বিক্রি শেষ হয়েছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে দ্বীপে পর্যটকের ভিড় আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।গত ১ ডিসেম্বর থেকে নৌপথে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার পর ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২২ হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করেছেন। সরকারি ট্রাভেল পাস ব্যবস্থার আওতায় প্রতিদিন নির্ধারিত সংখ্যক পর্যটকই দ্বীপে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন।ট্রাভেল পাস সংক্রান্ত সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ১৪ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ পাস ইস্যু করা হয় ১৪ ডিসেম্বর। ওইদিন ২ হাজার পাসের বিপরীতে ইস্যু করা হয় ১ হাজার ৮৭১টি পাস। ছয়টি জাহাজে করে সেদিন দ্বীপে যান ১ হাজার ৮৫৬ জন পর্যটক।সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, শুরুর দিকে যাত্রী কম থাকলেও সরকারি ছুটি শুরু হওয়ায় তৃতীয় সপ্তাহে হঠাৎ করেই পর্যটকের চাপ বেড়ে যায়। ডিসেম্বরের শেষ দিন পর্যন্ত সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। ২৫ ডিসেম্বর সরকারি ছুটি থাকায় ওই সময়েও ভ্রমণ চাপ থাকবে বলে তিনি জানান।তিনি আরও বলেন, নভেম্বর মাসে রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় পর্যটকদের আগ্রহ তুলনামূলক কম ছিল। তবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রাতযাপনের সুযোগ থাকায় বর্তমানে অনুমোদিত ছয়টি জাহাজ নিয়ম মেনে যাত্রী পরিবহন করছে।এদিকে, সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। এর মধ্যেও গত দুই সপ্তাহে কয়েকটি অনিয়ম ও টিকিট জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে।যাত্রা শুরুর দিন ১ ডিসেম্বর ট্রাভেল পাস ছাড়া টিকিট বিক্রির দায়ে ‘কেয়ারি সিন্দাবাদ’ নামের একটি জাহাজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ৩ ডিসেম্বর নুনিয়ারছড়া ঘাটে নকল কিউআর কোড সংবলিত টিকিট শনাক্ত করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। একই টিকিটে একাধিক যাত্রী ভ্রমণের চেষ্টা করলে বিষয়টি ধরা পড়ে।সবশেষ ১১ ডিসেম্বর একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হন মানিকগঞ্জ থেকে আসা ৪৪ জন পর্যটক। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই এজেন্সিকেও জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বাত্মক সহায়তা করছে এবং জালিয়াতির ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা তাসনিম জানান, প্রতিদিন ভোর থেকেই ঘাট এলাকায় কড়া তদারকি করা হচ্ছে। নির্ধারিত সীমার বাইরে কোনো পর্যটক পরিবহন করা যাবে না। নিয়ম ভাঙলে সঙ্গে সঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ২০২৩ সালে দ্বীপ সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ণ এলাকাকে সামুদ্রিক সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের অক্টোবরে দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জারি করা ১২ দফা নির্দেশনা বর্তমানে কঠোরভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।