• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ১১ই কার্তিক ১৪৩২ বিকাল ০৩:২১:০০ (26-Oct-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

পাকিস্তানের বিমান হামলায় আফগানিস্তানে নিহত ৪০, আহত ১৭০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানের কান্দাহারের স্পিন বোলদাক জেলার আবাসিক এলাকায় পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন নিহত এবং ১৭০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানা গেছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এবং আফগানভিত্তিক টোলো নিউজে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের ওই হামলায় সরাসরি বেসামরিক বাড়ি-ঘরকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক মানবিক ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।স্পিন বোলদাকের জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান করিমুল্লাহ জুবায়ের আগা বলেছেন, বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা অত্যন্ত বেশি। তিনি বলেন, আমাদের মোট ১৭০ জন আহত এবং ৪০ জন নিহত হয়েছে।হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেছেন যে, যুদ্ধের নিয়ম লঙ্ঘন করে পাকিস্তান ইচ্ছাকৃতভাবে স্পিন বোলদাকে বেসামরিক অবকাঠামো এবং বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।আফগানিস্তানের তালেবান সরকার দাবি করেছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক এলাকায় মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার ভোরে পাকিস্তান হামলা চালায়।বিমান হামলার শিকার হাজী বাহরাম বলেন, ইতিহাসে আমি এমন অবিচার কখনো দেখিনি। নিজেদের মুসলিম দাবি করা একটি দেশ এখানে নারী, শিশু এবং ঘরবাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে। সবকিছু আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া আব্দুল জহির বলেন, তারা মুসলিম শিশু এবং নারীদের ওপর বোমা হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তান নির্লজ্জতার সাথে এসব হামলা চালিয়েছে।বিমান হামলায় আহত নুরগালি বলেন, এখানে কোনো সামরিক কর্মী ছিল না, কেবল বেসামরিক নাগরিক এবং একটি স্থানীয় বাজার ছিল, তবুও আমাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।বিমান হামলার পাশাপাশি, পাকিস্তানি কামানের গোলাবর্ষণে নকলি, হাজী হাসান কেলে, ওয়ারদাক, কুচিয়ান, শোরাবাক এবং শহীদ এলাকায় বেসামরিক বাড়ি-ঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ওই এলাকার বাসিন্দারা এই ঘটনাগুলোকে মারাত্মক ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত আরেক বাসিন্দা দাওয়াজান বলেন, এখানকার সবাই পাকিস্তানের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং অনেকেই পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন।আরেক ভুক্তভোগী হুকুম খান বলেন, রাতে যখন মানুষ ঘুমাচ্ছিল তখন হামলা চালানো হয়। অনেকেই নিহত হন এবং কিছু লোককে তাদের প্রিয়জনদের নিজ হাতে কবর দিতে হয়েছে।সংঘর্ষ এবং বিমান হামলার পর স্পিন বোলদাক এখন অনেকটাই শান্ত রয়েছে বলে জানা গেছে এবং স্থানীয় বাজারগুলোও আংশিকভাবে পুনরায় খোলা হয়েছে।এদিকে এসব হামলার পর পরই ৪৮ ঘণ্টার ‘অস্থায়ী’ যদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগান তালেবান সরকারের অনুরোধে ও পারস্পরিক সম্মতিতে দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার জন্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।পররাষ্ট্র দপ্তর আরও জানায়, এ সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষ সমস্যাটির একটি ‘ইতিবাচক ও টেকসই সমাধান’ খুঁজে বের করার লক্ষ্যে গঠনমূলক আলোচনায় অংশ নেবে।এর আগে কাতার ও ইরানের পরামর্শে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। তবে ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়েছিল।