• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৪ঠা পৌষ ১৪৩২ রাত ১২:২৮:৫৩ (19-Dec-2025)
  • - ৩৩° সে:

ক্ষেতলালে সূর্যমুখী চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন দিলীপ চন্দ্র

২ মার্চ ২০২৪ বিকাল ০৪:০৭:৫৩

সংবাদ ছবি

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: দূর থেকে দেখলে মনে হচ্ছে যেন বিশাল আকারের হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। তবে কাছে গেলে চোখে পড়ছে হাজারো সূর্যমুখী ফুল। বাতাসে দোল খেয়ে ফুলগুলো যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করার। ভোরের সূর্য উঁকি দিতেই আড়মোড়া ভেঙে এই সূর্যমুখী ফুলেরা জেগে ওঠে। আর সেই হলুদ ফুলের হাসিতে নিজেদের বৈকালীন সময় কাটাতে সেখানে ছুটে আসছেন প্রক্রিতি প্রেমীরা। মনোমুগ্ধকর এই দৃশ্যটির দেখা মিলেছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের নওটিকা গ্রামে। বীজ উৎপাদন ও সংগ্রহের জন্য এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে বাজিমাত করেছেন ওই গ্রামের কৃষক দিলীপ চন্দ্র সরকার। তিনি প্রায় এক একর ক্ষেতজুড়ে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে এখন লাভের স্বপ্ন দেখছেন।

Ad

ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে  রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বীজ উৎপাদন ও সংগ্রহের জন্য চলতি মৌসুমে উপজেলার নওটিকা গ্রামের কৃষক দিলীপ চন্দ্র সরকার ও রুপকুমার চন্দ্র বর্মনকে পরামর্শ দিয়ে প্রায় সাড়ে চার বিঘা পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী রোপনের জন্য বীজ দেওয়া হয়। গত ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর বপন করা হয়েছে কাভেরীচম্প জাতের কয়েক হাজার সূর্যমুখী ফুলের বীজ। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে বীজ দেওয়ার পাশাপাশি সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে।

Ad
Ad

সূর্যমুখী চাষকৃত ওই ক্ষেতের মালিক ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, দিনভর এই সূর্যমুখীর ক্ষেতে আসতেছে নানান বয়সী মানুষ। সূর্যমুখী ফুলের এ ক্ষেতটি এখন সৌন্দর্যপ্রেমীদের কাছে দর্শনীয় স্থানের মতো। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে আসছেন, কেউ বা আসছেন পরিবার পরিজন নিয়ে। সুখস্মৃতি ধরে রাখতে নানা ভঙ্গিতে মুঠোফোন কিংবা ক্যামেরায় ছবি তুলছেন তারা। দৃষ্টিকাড়া ফুলের মধ্যে ছবি তুলতে সবারই ভালো লাগে তাইতো এখানে ছুটে আসছেন সব বয়সের নারী পুরুষ। পাশাপাশি  সরকারি কর্মকর্তারাও ছুটির দিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে সেখানে ছুটে যাচ্ছেন।

ফুল থেকেই পাওয়া যায় বীজ। তাই ছবি তুলতে আসা কেউ যেন ক্ষেতের ভেতর ঢুকে বা পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ক্ষেত নষ্ট না করেন এবং ফুলে হাত না দেন এজন্য সার্বক্ষণিক নিজেই নজরদারী করছেন ওই কৃষক। আর কিছুদিন পর বীজ ঘরে তুলতে পারবেন তিনি। তার আগ মূহুর্তে দর্শনার্থীদের ভয়ে ক্ষেত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন ওই কৃষক।

শুক্রবারে সরেজমিনে সূর্যমুখীর ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, সবুজ গাছের হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো ক্ষেত। এমন এক দৃশ্য যেন প্রকৃতিকে করেছে আরও রূপময়ী। প্রতিদিনই সৌন্দর্য পিপাসু অনেকেই আসছেন দিলীপ চন্দ্রের সূর্যমুখী ফসলের ক্ষেতে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত জুরে রোপণকৃত এই সূর্যমুখী ফুল দেখতে সব বয়সী নারী-পুরুষ এখানে ঘোরাঘুরি করছেন, ছবি তুলছেন। তবে কেউ যাতে ফুলে হাত দিয়ে ক্ষেতের ক্ষতি না করে তার জন্য সবসময় তদারকি করছে কৃষক দিলীপ কুমার।

এ বিষয়ে কৃষক দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগীতায় বীজ উৎপাদন ও সংগ্রহের জন্য আমি এই সূর্যমুখী চাষ করেছি। আমার এক একর জমিতে সূর্যমুখী চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো। তবে সকল খরচ কৃষি অফিস বহন করেছে। আমার এই সূর্যমুখী চাষে অনেকেই অনেক ধরনের কথা বলেছে তবে আমি বুকে সাহস রেখে কৃষি অফিসারের সহায়তায় এই পর্যন্ত এসেছি। আর কিছুদিন পর হয়তো বীজ সংগ্রহ করতে পারবো। আমি ধারনা করছি আমার জমি থেকে প্রায় ৪০-৪৫ মন বীজ সংগ্রহ করা সম্ভব। এতে আমি আর্থিকভাবে ভালো লাভবান হবো।

ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা ক্ষেতলাল উপজেলা সহকারী কমিশনার  (ভূমি) জিন্নাতুন আরা বলেন, আমি জানতে পারি এ উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। তাই ছুটির দিনে ফুলের দৃশ্য দেখতে পরিবার নিয়ে ছুটে আসা। এমন মনোমুগ্ধকর পরিবেশে পরিবার নিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে খুব ভালো লেগেছে।

স্বামী-সন্তান নিয়ে ছবি তুলতে আসা এক গৃহবধূ বলেন, মাঠজুড়ে এমন সূর্যমুখী ফুল কখনো দেখিনি। স্মৃতিতে ধরে রাখতে এখানে ছবি তুলতে এসেছি আমরা। সত্যিই পরিবেশটা খুব ভালো।

কালাই উপজেলা শুভ সংঘের সভাপতি এম.এ. রাসেল আহম্মেদ বলেন, ফুল পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কম। আমাদের এলাকায় এভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ এর আগে কোথাও হয়নি। কাছ থেকে ফুল দেখতে এবং কিছু সৃতি ধরে রাখতে এখানে ছুটে আসা।

ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহিদুর রহমান জানান, সূর্যমুখী বীজ থেকে তেল সংগ্রহের জন্য মূলত সূর্যমুখীর চাষ করা হয়। চলতি মৌসুমে আমাদের উপজেলার নওটিকা গ্রামের কৃষক দিলীপ চন্দ্র ও রুপকুমার চন্দ্র বর্মনকে পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করে দু'জন প্রায় সাড়ে চার বিঘা পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। পুরো জমিতে ফুলে ভরে যাওয়াতে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখন সব শ্রেণির মানুষ ফটো তোলার জন্য ভিড় করছেন। মানুষের উপস্থিতি ভালো লাগছে। কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে, ফটো তুলতে গিয়ে যেন কৃষকের ক্ষতির কারণ না হয়।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ

সংবাদ ছবি
ওসমান হাদি ইন্তেকাল করেছেন
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ রাত ১২:২৭:১১



সংবাদ ছবি
মনোনয়নপত্র নিলেন মির্জা ফখরুল
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ রাত ০৮:২৬:৫৬




সংবাদ ছবি
ফসলি জমিতে পুকুর খননে বাধা, কৃষককে হত্যা
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৮:৩৮


সংবাদ ছবি
তাইওয়ানে ৫ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:১১:৫১


Follow Us